খালেদো বেগমের ছেলে মামুন আজ মানুষ হয়েছে । তবে এর পিছনে কষ্ট করতে হয়েছে
অনেক । একমাত্র মায়ের স্নেহ, ভালবাসা আর উৎসাহ উদ্দীপনা পেয়ে আজ মামুন অনেক
বড় । গ্রামের সরকারী প্রাইমারী স্কুল হতে ৫ম শ্রেণী পাশ করার পর,
বাবা-মায়ের ইচ্ছা অনুযায়ী মামুন একটি ফাজিল মাদ্রাসায় ভর্তি হয় । যখন মামুন
নবম শ্রেণীতে তখন তার অভিভাবক বাবা ইন্তেকাল করেন । পাচঁ ভাই তিন বোনের
মধ্যে মামুন সবার ছোট । তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর সবার ছোট বলে যেভাবে
স্নেহ, ভালবাসা ও সহযোগিতা পেয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল । কিন্তু
মামুনের ভাগ্যে তা হলো না । বাবা নেই এ কথাটা সে মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে ।
সামনে দাখিল পরীক্ষা থাকা সত্বেও পড়ালেখায় উদাসীন হয়ে যায় সে । তারপরেও
দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে পাশ করে মামুন । বাবা মারা যাওয়ার পর এক এক
করে সকল বোনদের বিবাহ হয়ে যায় । বোনেরা স্বামীর বাড়ীতে থাকে । তারপর মামুন
ছাড়া সকল ভাইয়েরা বিবাহ করে আলাদা হয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে । এদিকে মামুন
তার মা কে নিয়ে বাড়ীতে থাকে । বোনেরা কিছু খোজখবর রাখলেও ভাইয়েরা তেমন
খোজখবর রাখেনা । মা সকল কষ্ট, দুঃখ, ব্যাথা, বেদনা বুকের ভিতর চাপা দিয়ে
আছেন । কাউকে তিনি কষ্টের কথা বলেন না । নিরবে কেদেঁ কেদেঁ বুক ভাসান ।
মামুন প্রায় ভাইদের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলেও তারা করেনা । অনেক দুঃখ নিয়ে
মামুন ভাবতে থাকে কি করা যায় ? কিন্ত মা বললেন, বাবা ! আমিতে এখনো বেচেঁ
আছি । অবশেষে মামুনের মায়ের স্নেহ, ভালবাসা আর উৎসাহ, উদ্দীপনা পেয়ে
মাদ্রাসা হতে আলিম, ফাজিল, কামিল, এবং বিশ্ববিদ্যালয় হতে অনার্স, মাস্টার্স
শেষ করে । বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ ও তাঁর মায়ের কিছু উপার্জন দিয়ে সামনের
দিকে এগিয়ে চলে । মামুন তার মাকে নিয়েই বাড়ীতে থাকে এবং মা ছাড়া সে কিছুই
বুঝেনা । সে চাকরী করে মায়ের পিছনেই খরচ করে । মা তার জন্য সবসময় দোয়া করেন
। আজ মামুনের সকল উপার্জন মায়ের দোয়ার ফসল । আর এখন মা গর্ব করে বলছে ছেলে
আমার মানুষ হয়েছে
No comments:
Post a Comment