শিবপুর গ্রামের রহিমা বেগমের সাথে ঢাকার আঃ খালেকের বিবাহ হয় । তাদের
সাংসারিক জীবন ভালই কাটছে । আট বছরের মধ্যে তাদের ঘরে দু’টি সন্তানের জন্ম নেয় । একটি
ছেলে ও একটি মেয়ে । ছেলের নাম মামুন এবং মেয়ের নাম হলো মিম । হঠাৎ আঃ খালেক অসুস্থ
হয়ে পড়ে । সংসার জীবনে নেমে আসে অভাব অনটন । প্রিয় স্বামীকে সুস্থ করে তোলার জন্য
রহিমা বেগম বিভিন্ন মানুষের কাছে সাহায্য চায় । কিন্তু টাকার অভাবে আর চিকিৎসা
করতে পারলোনা রহিমা বেগম । স্বামীর অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যায় । অবশেষে আঃ
খালেক প্রিয়তমা স্ত্রী ও দু’টি সন্তানকে রেখে পরকালে পাড়ি জমায় । রহিমা খাতুন
দু’টি সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়লেন । অবশেষে তিনি এক বস্তিতে থাকা শুরু করলেন । মানুষের
নিকট হতে ভিক্ষা করে ও পরের রাড়ীতে কাজ করে অনেক কষ্টে দিন কাটাছে রহিমা খাতুনের ।
ছেলে মামুন ও ভিক্ষা করে তার মাকে সংসারের কাজে সহযোগিতা করে । একদিন মামুনের
ইচ্ছে করছে মিষ্টি খাওয়ার । সে মিষ্টির দোকানে যায় এবং মিষ্টি ক্রেতা ও বিক্রেতার
নিকট মিষ্টি খাওয়ার জন্য কিছু টাকা বা মিষ্টি ভিক্ষা চায় । কেউ তাকে সাহায্য না
করে দুরদুর করে তাড়িয়ে দেয় । মনের কষ্টে অনেক দূরে বসে আছে মামুন । মামুন হঠাৎ এক
মিষ্টির দোকানের দিকে তাকালো এবং দেখতে পায় দোকানদার মিষ্টি বিক্রি করার সময় একটি
মিষ্টি মাটিতে পড়ে যায় । মামুন গিয়ে মিষ্টিটি নিয়ে আসে । একটি কাগজের মধ্যে নিয়ে
দূরে এক স্থানে মিষ্টিটা খাওয়ার জন্য বের করে । কিন্তু মামুনের মিষ্টি খাওয়ার সময়
ছোট বোন মিমের কথা মনে পড়ে যায় । মামুন ভাবে বাবা থাকলে আজ মিমকে মিষ্টি খাওয়াতো ।
সে মিষ্টিটা নিয়ে বস্তিতে থাকা ছোট বোনের নিকট দৌড়ে চলে আসে । মামুন তাকে আদর করে
মায়া ভরা সোহাগ নিয়ে মিষ্টিটা খাওয়াচ্ছে । মিমতো অনেক মজা পাচ্ছে । বড় ভাইকে খেতে
বললে সে খায়না । এমনকি ভাইয়ের মুখে মিষ্টি তুলে দিচ্ছে প্রিয় ছোট বোন মিম । তাও
মামুন খাচ্ছেনা বরং তার দু’চোখ দিয়ে পানি ঝরে । আর ছোট বোনটি হাত দিয়ে তা মুছে
দিচ্ছে । এই হলো ভাই বোনের ভালবাসা ।
No comments:
Post a Comment