Friday, 11 September 2015

শিক্ষামূলক গল্প...

দুই বন্ধু মরুভূমির মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো। কিছুক্ষন যাত্রার পর তাদের দুইজনের মধ্যে ঝগড়া হয় এবং এক বন্ধু আরেকজনকে থাপ্পড় মেরে বসে। যে থাপ্পড় খেয়েছিল সে মনে কষ্ট পেলেও মুখে কিছু বলল না, শুধু বালিতে লিখে রাখল “আজকে আমার সব থেকে প্রিয় বন্ধু আমাকে চড় মেরেছে”।
এরপর তারা হাঁটতে থাকল এবং কিছুক্ষন পর একটি মরুদ্যান দেখতে পেল। তারা ঠিক করল সেখানে তারা বিশ্রাম নিবে এবং গোসল করবে। কিন্তু যেই বন্ধুটি চড় খেয়েছিল সে চোরাবালিতে আটকে পরে ডুবতে শুরু করে, তখন অপর বন্ধুটি তাকে বাঁচায়। উদ্ধার পাওয়ার পর সে পাথরে লিখে রাখল “আজকে আমার সব থেকে প্রিয় বন্ধু আমার জীবন বাঁচিয়েছে”।
তখন অপর বন্ধুটি তাকে জিজ্ঞাসা করল, “আচ্ছা, আমি যখন তোমাকে চড় মেরেছিলাম তখন তুমি বালির উপর লিখেছিলে আর এখন পাথরের উপর লিখলে, কেন?” উত্তরে সে বলল, “যখন কেউ আমাদের আঘাত করে তখন তা আমাদের বালির উপর লিখে রাখা উচিত, যেন ক্ষমার বাতাস তা সহজেই উড়িয়ে নিয়ে মুছে দিতে পারে। আর যখন কেউ আমাদের কোন উপকার করে তখন তা পাথরে খোদাই করে রাখা উচিত, যেন কোন বাতাসই তা কখনো মুছে দিতে না পারে”।

হৃদয়ের ব্যাধি সারানোর উপায়

এক ব্যক্তি এসে সুফয়ান আস-সাওরীকে জিজ্ঞেস করলোঃ “আমি হৃদয়ের ব্যাধিতে ভুগছি, আমাকে কোনো প্রতিষেধক দিন।”
সুফয়ান বললেনঃ তুমি ইখলাসের শেকড়, সবরের পাতা ও বিনম্রতার রস জোগাড় কর, এরপর এগুলোকে তাকওয়ার পাত্রে রাখো। এখন এতে আল্লাহ-ভীতির জল ঢালো এবং পাপের অনুশোচনার যে আগুন তাতে গরম কর। এবার একে আল্লাহ্‌র সদা উপস্থিতির ব্যাপারে যে সচেতনতা সেটার ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নাও। অতঃপর একে সত্যবাদিতার মুঠি দিয়ে তোলো এবং ক্ষমা ভিক্ষার পেয়ালা দিয়ে পান করো। ধর্মপরায়ণতা দিয়ে এবার অজু করে নাও এবং হিংসে ও লোভ থেকে দূরে থাকো। আল্লাহ্‌ চান তো তুমি অন্তরের ব্যাধি থেকে মুক্তি পাবে।
[উস্তাদ শায়খ মুহাম্মাদ বিন হাস্‌সানের “ফিক্‌হ আদ-দা’ওয়াহ” লেকচার থেকে নেয়া]

আত্মমূল্যায়ণ

একদিন এক ছোট্ট ছেলে পাড়ার ঔষধ দোকানে গিয়ে একটি বাক্স টেনে আনল দোকানের টেলিফোনটি নাগাল পাওয়ার জন্য। তারপর সে বাক্সটির উপর উঠে দাঁড়াল এবং টেলিফোনটি হাতে নিয়ে একটি নাম্বারে ডায়াল করল।
দোকানদার ঘটনাটি লক্ষ্য করল এবং কথোপকথনটি শোনার চেষ্টা করলঃ
ছেলেঃ জনাবা, আপনি কি আমাকে আপনার বাগানের ঘাস কাটার কাজটি দিতে পারবেন?
মহিলাঃ (ফোনের অন্য পাশ থেকে) ইতোমধ্যে বাগানের ঘাস কাটার জন্য একজন কর্মচারী আছে।
ছেলেঃ জনাবা, যে এখন আপনার বাগানের ঘাস কাটে আমি তার চেয়ে অর্ধেক দামে কেটে দিব।
মহিলাঃ যে এখন আমার বাগানের ঘাস কাটে, আমি তার কাজে খুবই সন্তুষ্ট।
ছেলেঃ (আরও বেশি আন্তরিকতার সাথে) জনাবা, আমি আপনার উঠান এবং বাড়ির চারপাশও ঝাড়ু দিয়ে দিব। ফলে সাপ্তাহিক ছুটির দিন আপনি সবচেয়ে গোছানো বাড়িটি পাবেন।
মহিলাঃ থাক, ধন্যবাদ।
মুখে তৃপ্তির হাসি নিয়ে ছেলেটি টেলিফোন নামিয়ে রাখল। দোকানমালিক, যিনি ঘটনাটি দেখছিলেন, তাড়াতাড়ি ছেলেটির কাছে ছুটে গেলেন।
দোকানমালিকঃ বাবা, তোমার দৃষ্টিভঙ্গী আমার খুব পছন্দ হয়েছে; তোমার ইতিবাচক মনোভাব আমার ভাল লেগেছে এবং আমি তোমাকে একটি কাজ দিতে চাই।
ছেলেঃ থাক, ধন্যবাদ।
দোকানমালিকঃ কিন্তু তুমি তো চাকরিটি পাওয়ার জন্য খুব চেষ্টা করছিলে।
ছেলেঃ না জনাব, আমি শুধু আমার কাজর কতটা ভাল হচ্ছে তা মূল্যায়ণ করছিলাম। আমিই সে লোক যে ঐ মহিলার বাগানে কাজ করি।
এটাকেই বলা হয় আত্মমূল্যায়ণ, যা আপনাকে আপনার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে উৎসাহিত করে এবং আপনার দুর্বলতাগুলো দেখিয়ে দেয়।
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে,
“যে কেউ সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে উৎকৃষ্টতর প্রতিদান পাবে এবং সেদিন তারা গুরুতর অস্থিরতা থেকে নিরাপদ থাকবে।”
[সূরা আন-নামলঃ ৮৮]

যাঁর রয়েছে নিখুত সৃষ্টির হাত

আমি অবাক নয়নে চাহিয়া যে রই
বাতাসে হেলে দুলে ওঠা কাশফুলের পানে
মুগ্ধ! ওগো মুগ্ধ আমি….
এই সৃষ্টি রাজির শানে।

শরৎ এলে এমনি বিমোহিত
হয়ে যাই র্নিবাক,
তিনিই মহান স্রষ্টা আমার
যাঁর রয়েছে নিখুত সৃষ্টির হাত।

সাহিত্যের লিংকসমূহঃ